133 ) ইফতারের আরও পাঁচ মিনিট বাকি আছে (DELAY FOR FIVE MINUTES TO IFTAR) ! - 🙌🏻⌨️📲 Written by Junayed Ashrafur Rahman
133 ) ইফতারের আরও পাঁচ মিনিট বাকি আছে (DELAY FOR FIVE MINUTES TO IFTAR) ! - 🙌🏻⌨️📲 Written by Junayed Ashrafur Rahman ✒
2005 সালের রমজান মাসের এক ইফতারের দাওয়াতে কয়েকজন বেরোজাদার ইফতারের পাঁচ মিনিট আগেই খাওয়া শুরু করে আর বলতে থাকে," ইফতারের আরও পাঁচ মিনিট বাকি আছে।"
2005 সালের রমজান মাসে আমার কয়েকজন ক্লাসমেট - মানে , আমার সঙ্গে নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে পড়তো - আমাকে ইফতারের দাওয়াত করে।
দাওয়াতের স্হান নান্দাইল পাইলট গার্লস স্কুলের মাঠ।
তবে , ছেলেদের ইফতারের আয়োজন মেয়েদের স্কুলে কীভাবে হলো ? - সেটা ওরাই জানে ।
তাই , ইফতারের প্রায় পনের মিনিট আগে আমি আর আমার পরিচিত কয়েকজন গেলাম ইফতারে।
আমরা যাওয়ার একটু পরেই এক হুজুর দোয়া শুরু করলেন এবং কয়েক মিনিট পরে দোয়া শেষ করলেন।
আর আমরা রোজাদারেরা বসে অপেক্ষা করছি আজানের জন্য।
এমন সময় আমাদের পাশের কয়েকটা ছেলে খাওয়া শুরু করে। এটা দেখে ওদেরকে পাশের এক হুজুর বললেন,"তোমরা খাচ্ছো কেন ? ইফতারের তো এখনও পাঁচ মিনিট বাকি আছে।"
এই কথা শুনে ওদেরই একজন বললো," আপনারা কেউই খাবেন না। ইফতারের এখনও পাঁচ মিনিট বাকি আছে।"
তখন ঐ হুজুর বেশ রেগে ধমক দিতে চাইলেন। আমি হুজুরকে হাত তুলে থামতে ইশারা করলাম ।
হুজুর তখন চুপ করলেও ইফতারের পরে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,"আমি ঐ বেয়াদবটাকে ধমক দিতে চাইলাম আর আপনি আমাকে থামাতে চাইলেন কেন ?"
আমি তখন বললাম,"যে ছেলেটা এমন করতে পেরেছে - তাকে যদি আপনি পাল্টা ধমক দেন , তবে সে উল্টো আপনাকে অপমান করতে পারে।"
এই কথা শুনে হুজুর বললেন,"তাহলে ঐ বেয়াদবির প্রতিবাদ করার দরকার নাই ?"
আমি বললাম,"ইফতারটা রোজাদারের জন্য ইবাদত হলেও বেরোজাদারের জন্য আনন্দ - ফুর্তির ব্যাপার। ওদেরটা ওরা করেছে আর আমাদেরটা আমরা।"
তখন হুজুর বললেন,"আপনি তো বেশ ভালো কথা জানেন , কী করেন আপনি ?"
আমি বললাম ,"শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে ইন্টারে পড়ি।"
তখন ঐ হুজুর বলেন,"আর কী করেন ?"
আমি বললাম ,"রাত জেগে বই পড়ি , সকালে মার্শাল আর্টস প্র্যাকটিস ও মিলিটারি ট্রেনিং করি , নিয়মিত কলেজে যাই। ছুটির দিনে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে গাছের বাগান করি। আর কিছু বলতে হবে ?"
তখন ঐ হুজুর আমতা আমতা করে বললেন,"ঐ ছেলেটা বেয়াদব আর আপনি তো দেখা যায় অত্যন্ত বিপজ্জনক মানুষ !"
আমি বললাম,"কেন ?"
তখন ঐ হুজুর বললেন,"আপনি এতো কিছু করেন , তাই।"
তখন আমি বললাম,"রাত জেগে বই পড়া আমার ছোটবেলার অভ্যাস - যেমনটা ছিলো এরিস্টটলের। মার্শাল আর্টস প্র্যাকটিস করি শরীর ঠিক রাখার জন্য , মিলিটারি প্র্যাকটিস করি এই কারণে যে , ইন্টার পাশ করার পর সেনা বাহিনীর অফিসার হিসেবে যোগদানের নিয়ত আছে তাই। আর বাড়িতে বাগান করি আমার বাবায় গাছ লাগায় , তাই সেই সূত্রে। এতে বিপজ্জনকের কী পেলেন আপনি ?"
তখন ঐ হুজুর মুখ বন্ধ করে দাড়িয়ে রইলেন।
আমিও চলে এলাম।
🌟 পরেরদিন আমার এক ক্লাসমেট বলেছিলো , ঐ হুজুরটা আসলে হুজুর না। কলেজের শিক্ষায় শিক্ষিত এক সিআইডি পুলিশ (BDCID = Bangladesh Criminal Investigation Department ) । সারাদেশে বাংলা ভাই আর বুড়া হুজুরের (Old Teacher) তাণ্ডবের কারণে যেস্হানেই মানুষ বেশি হয় , সেস্হানেই ওরা যায় - সেটা ইফতার হউক অথবা বিয়ের অনুষ্ঠান।
আমি বললাম,"তোমাকে এটা কে বলেছে ?"
তখন আমার ক্লাসমেট বলল , ঐ ইফতারে নান্দাইল থানার এক পুলিশও ছিলো - সেই পুলিশই ঐ হুজুরের আসল পরিচয় বলে দিয়েছে।
আমি অবশ্য ব্যাপারটাকে তেমন গুরুত্ব দিইনি।
কেননা , তখন আমি প্রস্তুত হচ্ছিলাম সেনাবাহিনীর অফিসার হওয়ার জন্য - সিআইডি নিয়ে আমার তখন কীসের সমস্যা ? (এখনও কিন্তু সমস্যা নাই। )
পনের বছর পেরিয়েছে - কিন্তু এখনও মনে পড়ে,"ইফতারের আরও পাঁচ মিনিট বাকি আছে !"
Comments
Post a Comment