135 ) ইফতারের পরে সাত খুন (SEVEN MURDERS AFTER IFTAR) ! - 🙌🏻⌨️📲 Written by Junayed Ashrafur Rahman

135 ) ইফতারের পরে সাত খুন (SEVEN MURDERS AFTER IFTAR) ! - 🙌🏻⌨️📲 Written by Junayed Ashrafur Rahman ✒ 

2015 সালের রমজান মাসের এক ইফতারের পরে ময়মনসিহের নান্দাইলের বাঁশহাটি গ্রামে সাতটা খুন হয়েছিলো

সেদিন রোজা রাখার পরে ইফতার করি আমার বাড়িতেই। তারপরে বিশ্রাম করি। তারাবির পরে একটু হাঁটতে হাঁটতে নান্দাইল বাসস্ট্যান্ডে এসে একটা হোটেলে বসে আলুর চপ আর বেগুনের চপ (নান্দাইলে "বেগুনি" বলা হয়) খাচ্ছিলাম।

এমন সময় , একলোক এসে হোটেলের মালিককে বলল ,"বাশাডিত সাতটা মাডার অইছে (বাঁশহাটিতে সাতটা মার্ডার হয়েছে) !" 

তখন হোটেল মালিক বলল ," ফইলা ফুনছি ছাইরজন , ফরে ফুনি ফাজ্জন আর অহন তুই আইয়া কস সাতজন। কোনডা হাছা (প্রথমে শুনলাম , চারজন , পরে শুনলাম পাঁচজন , এখন তুই এসে বলছিস সাতজন। কোনটা সত্য) ?" 

তখন আরেকজন শিক্ষিত লোক বললেন ,"আমিও এমন শুনেছি। তবে সাতজনই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি !" 

আমি বললাম,"আসলেই কি এমনটা হয়েছে ?" 

তখন ঐ লোক বলল ,"হ বাই , অক্করে হাছা কতা। আমি অটু লিসকা ছালাই। গেসলাম বারা লইয়া মেরসিফুর। ফরে ফুনি , ইপতারির ফরে সাতটা কুন অইছে। ফরে আমি লিসকা লইয়া বাশাডি যাই। বাজারো ফুনি কুন সাতটা অইছে। আর মানুষ ডরাইয়া দোহান বন্দ হইররা বাড়িত যাইতাছেগা। ফুলিশে যুদি দরে। আরো ফুনছি রেফ আইবো। আইয়া বিছরায়া বাইর হরবো , কেডা মারছে (জ্বী ভাই , একেবারে সত্য কথা। আমি অটো রিক্সা চালাই। গিয়েছিলাম ভাড়া নিয়ে মিশ্রিপুর। পরে শুনি ইফতারের পরে সাতটা খুন হয়েছে। পরে আমি রিক্সা নিয়ে বাঁশহাটি যাই। বাজারে শুনি খুন সাতটা হয়েছে। আর ভয় পেয়ে মানুষ দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যাচ্ছে। পুলিশে যদি ধরে। আরও শুনেছি , Rab আসবে। এসে খুঁজে বের করবে, কে খুন করেছে) ?"

(🌟 প্রিয় পাঠক / পাঠিকা , এই লিখা আমার অভিজ্ঞতা থেকে লিখছি। তবে, লিখছিনা পুলিশ অথবা Rab অথবা অন্যকোন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ি। তাই ঐ ঘটনা সম্পর্কে আমার লিখা ও পুলিশ - প্রশাসনের রিপোর্টের কিছুটা হেরফের , মানে পার্থক্য হতেই পারে। তবে , এটা কোন বিষয় না।) 

আমি আরও এক প্লেট ছোলা ভুনা খেয়ে টাকা পরিশোধ করে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটতে লাগলাম। 

🌟 ব্যাপারটা আমার কাছে আশ্চর্যজনকই ছিলো। 

ছোটবেলায় বিটিভিতে মেগা সিরিয়াল "দি সৌর্ড অব টিপু সুলতান"-এ দেখতাম মহিশুরের নবাব হায়দার আলি(শাহবাজ খান)র ছেলে টিপু সুলতান (সঞ্জয় খান) যুদ্ধ করছে লর্ড কর্নওয়েলস আর লর্ড ডালহৌসির সৈন্যদের বিরুদ্ধে। 

যুদ্ধ না বলে কুপানি (CHOPPING) বললেই ভালো হয়। টিপু সুলতান নিজের ঘোড়ার উপরে বসে আছে , আর তাকে ঘিরে আছে শত্রুরা। আর শুরু হলো টিপুর কুপানি (CHOPPING) । টিপু একেকটা কুপ দেয় আর এক কুপেই একেকটা শত্রু মরে ঘোড়া থেকে নিচে পতিত হয়। 

তবে, ঐ মেগা সিরিয়াল তৈরিতে সঞ্জয় খান হয়তো নসিম হিজাজি রচিত উপন্যাস ,"তলবার টুট গিয়া (ভেঙ্গে গেলো তলোয়ার)" থেকে কাহিনি নিয়ে থাকতে পারেন। 

🌟 আবার তামিল আর তেলেগু ছবিতে দেখতাম কুপাকুপির (CHOPPING) মার। যেগুলোতে টেকনিকেল কোন ফাইট ছিলো না। 

🌟 কিন্তু , ধারালো অস্ত্র কতো ধরণের হতে পারে আর সেগুলো দিয়ে কীভাবে ফাইট করতে হয়, সেটা প্রথম দেখেছিলাম জেট লি - র ছবি,"শাওলিন টেম্পল (শাওলিন মন্দির)" ছবিতে। 

জেট লি কোন সাধারণ অভিনেতা না। 
বছরের পর বছর কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে অনেকগুলো ব্ল্যাক বেল্ট অর্জন করা মার্শাল আর্টসের উস্তাদ !

🌟 পরবর্তীতে দেখলাম , উমা থারমেন অভিনীত "কিল বিল (KILL BILL - বিলকে হত্যা করো)। 

বিল নামের অপরাধি এক নেতাকে হত্যা করার মিশন। আর সেটা করতে গিয়ে বিলের অনুগত আরও কিছু অপরাধি নেতাকেও হত্যা করতে হয়। 

কিল বিল 2 (KILL BILL 2) রিলিজ হওয়ার আগে উমা থারমেন বলেছিলেন ,"যাদের হার্ট দুর্বল এবং যারা শিশু ওরা যেন , ঐ সিনেমা না দেখে !" 

কেননা , টেকনিকেল ফাইটের পাশাপাশি দেখানো হয়েছে ভয়ঙ্কর খুনাখুনির দৃশ্য। 

🌟 কিন্তু , থাইল্যান্ডের অভিনেতা টনি জা নতুন এক চমক দেখালেন 
ওং বেক (ONG BAK 2) সিনেমাতে। 

ফাইট কাকে বলে সেটা দেখিয়েছেন , হাত - পায়ের ফাইটের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্রের টেকনিকেল ফাইট। কোন স্টান্টমেন অথবা ভিজুয়াল এফেক্ট ছাড়াই। 

কেননা , টনি জা নিজেও জেট লি - র মতো একজন মার্শাল আর্টসের উস্তাদ ! 

🌟 মার্শাল আর্টস সিনেমাতে যুক্ত হলো আরেকটা নতুন চমক ,"নিনজা এসাসিনেশন (NINJA ASSASSINATION)" । 

দক্ষিণ কোরিয়ান ঐ ছবিতে দেখানো হয়েছে , নিনজা ঘাতকদের দলীয় বিবাদের কারণে নিজেদের খুনাখুনির দৃশ্য। একেবারে কেটে টুকরো করে ফেলানোর দৃশ্য। 

আর ঐ ছবি করার জন্য , সকল অভিনেতাদেরকেই দীর্ঘদিন মার্শাল আর্টস প্র্যাকটিস করতে হয়েছিলো। 

🌟 আরও পরে দেখলাম মিলা জেকোভিচের সাইন্স ফিকশন সিনেমা ,"আল্ট্রা ভায়োলেট (ULTRA VIOLET)" ।

পিস্তল দিয়ে (GUN FIGHT) ফাইট করার পাশাপাশি ধারালো অস্ত্রের ফাইট। 

শেষের ফাইটটা তো শেষ হয়েছে তলোয়ারের ফাইট দিয়েই। 

🌟 জেমস বন্ড সিরিজের ,"ডাই এনাদার ডে (DIE ANOTHER DAY) ছবিতেও আছে ধারালো অস্ত্রের ফাইট। 

🌟 আর হ্যাঁ , বাংলাদেশের ছবি ,"নয়া মাস্তান"-র কথা বলতেই হয়। গ্রামের একটা ছেলে ঢাকার সেরা দুই গুন্ডার দলকে রাম দা (BIG COPPER) দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছিলো। সেই ছবির ডায়লগ,"কুবা শামসু , কুবা !" (CHOP SHAMSU, CHOP) অনেকেই হয়তো শুনেছেন। 


🌟 ওগুলো তো অবসরের বিনোদন ছাড়া কিছুই না। 

কিন্তু নান্দাইলে এমন ঘটনা আমাকে সত্যিই হতবাক করেছিলো। 

তাই , বাড়িতে এসে সিদ্ধান্ত নিলাম , ঐ ঘটনার ব্যাপারে জানার জন্য আমি নিজেই বাঁশহাটি গিয়ে ঘুরে আসবো। 

🌟 এর প্রায় এক সপ্তাহ পরে আমি গেলাম বাঁশহাটি বাজারে। সেস্হানের কয়েকজন আমাকে বললেন , ঐ গ্রামের প্রাপ্ত বয়স্ক কোন পুরুষকে আমি পাবো না। কেননা , গ্রেফতারের ভয়ে ওরা পলাতক আছে । 

🌟 তাই , ঐ গ্রামের পাশের গ্রামের কয়েকজন আমাকে যেগুলো বলেছিলেন , সেগুলো এমন ✒ 

যারা খুন হয় - ওরা দিনের বেলা জমি নিয়ে পাশের বাড়ির , মানে তাদেরই জ্ঞাতি গোষ্ঠীর সঙ্গে জমি নিয়ে মারামারি করে। 

কিন্তু যার সঙ্গে মারামারি করে , সেই লোকের ছেলেরা বাড়িতে থাকে না। তাই সুযোগ পেয়ে ঐ লোককে লাঠি দিয়ে আঘাতও করে। 

এই ঘটনাটা ঐ লোকের ছেলেদেরকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানানো হয়। 

ঐ দিনই ইফতারের ঠিক পরেই কোত্থেকে জানি একলোক আসে , আর মারামারি করা লোকদেরকে খুন করে। আর ঐ খুনগুলো করা হয়েছে নাকি মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে !!

শুধু তাই না , সেই খুনিটা খুন করে যাওয়ার সময় যে লোক খুনিটাকে হায়ার করে এনেছিল - তাকেও খুন করে একটা পুকুরে ফেলে রেখে যায় । 

🌟 কিন্তু একজন আমাকে বলেন যে , আসলে ঐ খুনিটাই নাকি এতো লোককে খুন করে নিজেই পুকুরে পতিত হয়ে হার্টফেল করে মারা যায়। 

কিন্তু ঐ মতামত আমার কাছে যুক্তিসঙ্গত মনে হয়নি। কেননা , যে লোক সাতটা খুন করতে পারে , সে হার্টফেল করার মতো লোক না। যদি হার্টফেল করার মতো লোক হতো , তবে খুন করার আগে নিজেই হার্টফেল করতো। 

🌟 আবার আরেকজন আমাকে বলেন , আসলে ঐ খুনিটা এতোগুলো খুন করার পরে নিজেই আত্মহত্যা করে। 

এই মতামতও আমার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। 

কেননা , যে লোক হায়ারে গিয়ে মানুষ খুন করে , সে আত্মহত্যা করবে কেন ? 

সাধারণত খুন করে আত্মহত্যা করে ব্যর্থ প্রেমিক অথবা প্রেমিকারা। 

এটাতো জমি নিয়ে খুনাখুনি - তাই আত্মহত্যারও কোন প্রশ্ন আসে না। 

🌟 তাই প্রথম মতামতটাই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছিলো। মানে , খুন করার পরে খুনিকে হায়ার করে যে এনেছিল , তাকেও খুন করে পুকুরে ফেলে রেখে খুনিটা চলে যায়। 


🌟 পরবর্তীতে জানতে পারি , অনেকেই মনে করেছিলেন খুনিকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব Rab কে দেয়া হবে। কিন্তু দেওয়া হয়েছিলো ডিবি পুলিশকে। 

আর ডিবি পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঐ খুনি আর ওর সহযোগিকে গ্রেফতার করে। 

🌟 পরে আমি আর কোন খোঁজ নিইনি। 
কেননা , আমার আব্বার নির্দেশে আমি চাকরিতে (EMPLOYMENT OF PRIVATE COMPANY) যোগদান করি একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে। 



Comments

Popular posts from this blog

151)POWER OF THE PRIME MINISTER.(প্রধানমন্ত্রীর দাপট।) - Written by Junayed Ashrafur Rahman

2) What will you do in the future (কী করবে তুই)?