78 ) ⏰🗺️ বাচ্চু সাহেব কর্তৃক আজিজুল কমিশনারকে হত্যার দশ বছর প্রসঙ্গে ✒

78  ) ⏰🗺️ বাচ্চু সাহেব কর্তৃক আজিজুল কমিশনারকে হত্যার দশ বছর প্রসঙ্গে All Links  ✒

2010 সালের 15 ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে আমার বাড়ি থেকে মাত্র প্রায় দেড় শ মিটার দক্ষিণে  ব্রিজের উপরে আচারগাঁও মাদ্রাসার পশ্চিমের বাড়ির বাচ্চু সাহেব কর্তৃক ময়মনসিহের নান্দাইল পৌরসভার 7 নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ( তৎকালীন কমিশনার ) আজিজুল সাহেবকে ( আজিজুল কমিশনার ) কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

🌟 আমি 2010 সালের ফেব্রুয়ারি 16 তারিখের সকালবেলা মানুষের হৈচৈ শুনে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি অনেক নারী - পুরুষ ব্রিজের উপর জড়ো হয়ে হৈচৈ করছেন।

আমিও ব্রিজের উপরে গিয়ে শুনলাম , গতকাল রাতে বাচ্চু সাহেব আর তার বন্ধুরা আজিজুল কমিশনারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

আমি ব্রিজের পশ্চিম পাশে দেখলাম রক্তের দাগ আর ব্রিজের বাইরে পশ্চিম দিকে নিচেও নদীর শুকনা অংশে রক্তের দাগ।

লোকে বলাবলি করছেন , আজিজুলকে কুপানোর সময় রক্ত ফিনকি দিয়ে কিছুটা ব্রিজে পড়ে আর কিছুটা নদীর শুকনা অংশে পড়ে।

অদ্ভুত হলেও সত্য , উপস্হিত বেশিরভাগ মানুষই এই ঘটনাটা জেনেছেন সকালবেলা।

অর্থাৎ , রাতে ঘটনার সময় অথবা পরে জানতে পারেননি।

🌟 আমি যে কারণে রাতে জানলাম না ✒

ছোটবেলা থেকেই আমি বিশেষ কিছু  সুন্নাত র উপর নিয়মিত আমল করি। তন্মধ্যে হচ্ছে রাতে খাওয়ার পরে অল্প হাঁটা। সেটা বাড়ির ভিতরে অথবা বাইরে।

সে রাতেও আমি আবার খেয়ে হাঁটতে হাঁটতে ব্রিজ পার হয়ে নদীর ঐপারে যাই।

হাঁটতে হাঁটতে  গারুয়া মোড়   থেকে ফিরে আসার সময় আমার এক বন্ধু আমাকে ডাক দেয়।

তাই আমি তার কাছে গেলে বিভিন্ন ব্যাপারে আলোচনা করি আর পাউরুটি , লাড্ডু খাই।

🌟 প্রায় ঘন্টা খানেক আড্ডা মারার পর আমি ব্রিজ পার হয়ে আনার সাহেবের দোকানের কাছে  নান্দাইল বাজারের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ির সঙ্গে দেখা হয়। তার সঙ্গে আড্ডাবাজিতে আরও প্রায় ঘন্টাখানেক সময় পার হয়।

🌟 এইভাবেই ঐরাতে সুন্নাত পালন করার জন্য বের হয়ে আড্ডাবাজিতেও সময় পার হয়।

প্রায় এগারটার সময় স (কাঠ) মিলের সামনে ফলের দোকানে  প্রায় সাড়ে এগারটার সময় বসে একটা কমলা খাচ্ছিলাম।

এমন সময় দেখি আজিজুল কমিশনার আর তার আরেক বন্ধু সিগারেট খেয়ে হেঁটে হেঁটে দক্ষিণ দিকে আসছেন।

আমি অন্য আরও কজন তখন ভাবতেও পারিনি যে সেটাই হবে আজিজুল কমিশনারের সঙ্গে আমাদের শেষ দেখা !!!

আমি তাঁকে সালাম দিলাম আর কমলা খাওয়ার জন্য বললাম।

তিনি সিগারেট খাচ্ছেন , তাই কমলা খাবেন না , বলে আমাদের পাশ দিয়ে গেলেন।

পরে দেখলাম আনার সাহেবের দোকানের পশ্চিম পাশে টুটুল সাহেবদের মার্কেটে হাজেল সাহেবের হোটেলে ( বর্তমানে ইদ্রিস সাহেবের ওয়ার্কশপ  ) আজিজুল কমিশনার আর তার বন্ধু প্রবেশ করেন। আমিও আরো কিছুক্ষণ পরে কমলার দাম দিয়ে আমার বাড়িতে এসে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের , " পথের পাঁচালী " উপন্যাস আবার পড়তে লাগলাম।

🌟 নান্দাইল পৌর শহরে রাত বারোটা, একটা এমনকি দুইটা পর্যন্তও মানুষ চলাফেরা করে আর আড্ডাবাজিও করে।

আবার অনেকেই খেলা দেখে হৈচৈ করে। আবার কেউ বাংলা মদ খেয়েও মাতলামি করে হৈচৈ করে।

🌟 আমি উপন্যাস পড়ছি , হঠাৎ করে শুনি মানুষের চিৎকার আর হৈচৈ।

তা শুনে আমি মনে করেছিলাম হয়তো লুডু খেলা নিয়ে মদ খাওয়া নিয়ে হৈচৈ হচ্ছে।

আমি আর বাড়ি থেকে বের না হয়ে উপন্যাস পড়তে লাগলাম।

আরও কিছুক্ষণ পরে শুনলাম , এম্বুলেন্স হর্ন বাজিয়ে উত্তর দিকে যাচ্ছে।

🌟 হসপিটাল থেকে নিয়মিতই এম্বুলেন্স দিন রাতে রোগী নিয়ে ময়মনসিংহে যায়।

শুধু তা - ই না , বরং হোসেনপুর , পাকুন্দিয়া থেকেও এম্বুলেন্স এই রোড দিয়ে রোগী নিয়ে ময়মনসিহে যায়।

তাই এম্বুলেন্সের শব্দ শুনেও আমি বের হইনি।

🌟 আর পরের দিন সকাল বেলা হৈচৈ শুনে ব্রিজে গিয়ে জানলাম , আমার মতও আরও অনেকে আজিজুল কমিশনারের হত্যার ঘটনা রাতে জানতে পারেন নি !

🌟 আজিজুল কমিশনার ✒

আজিজুল কমিশনার ছিলেন 7 নং ওয়ার্ডের নাগরিক এবং নান্দাইল হসপিটাল মোড়ের ব্যবসায়ি ।

নান্দাইল পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে বিপুল ভোটে পাশ করে আজিজুল কমিশনার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।

🌟 বাচ্চু সাহেব ✒

আচারগাঁও মাদ্রাসার পশ্চিমের বাড়ির এবং 6 নং ওয়ার্ডের নাগরিক বাচ্চু সাহেব একজন ব্যবসায়ি। তিনির ধানের বয়লার , ধানের কল ( মিল ) আর ধানের ব্যবসাও আছে।

কিন্তু আজিজুল কমিশনারকে খুন করার পরে এই বাচ্চু সাহেবই খুনি বাচ্চু হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন।

🌟 খুনের কারণ ✒

আমি যেগুলো জানতে পেরেছি : - 

2009 সালে আওয়ামী লীগ গভমেন্ট ক্ষমতায় এলে বিএনপি করা বাচ্চু সাহেবের প্রভাব কমতে থাকে।

বিশেষ করে এলাকার দেনদরবারে বাচ্চু সাহেবকে না ডেকে সাধারণ মানুষ আবার আগের মতো আজিজুল কমিশনারকে ডাকতে শুরু করেন।

আবার গারুয়া মোড়ে জলসিঁড়ি বাস টার্মিনাল - র মাতাব্বরি ( কর্তৃত্ব ) নিয়েও শুরু হয় দ্বন্দ্ব। 

আবার টার্মিনালের পাশেই বাচ্চু সাহেবের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান  এবং ধানের বয়লার  থাকার কারণে তিনি এককভাবে জলসিঁড়ি বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছিলেন। 

এবং টার্মিনালের দক্ষিণ দিকের কিছু জমি নিয়েও আজিজুল কমিশনার আর বাচ্চু সাহেবের দ্বন্দ্ব চরমে পরিণত হয়। 

মূলত এইসব কারণেই আজিজুল কমিশনারকে বাচ্চু সাহেব নাকি খুন করেন। 

🌟 বাচ্চু সাহেবের বাড়ি - ঘরে হামলা ✒ 

17 তারিখে আজিজুল কমিশনারের রাজনৈতিক বন্ধুরা বাচ্চু সাহেবের বাড়ি - ঘর ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। 

দুই দিন পরে আমি যাই বাচ্চু সাহেবের বাড়িতে। গিয়ে দেখি তখনও অল্প ধোঁয়া উড়ছে। 

আমাকে বাচ্চু সাহেবের বাড়ির মহিলারা বলেন যে কথা তা এমন , সেই সময়ের নান্দাইল আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ স্থানীয় নেতা তিনির অনুগত নেতাকে হুকুম করেছিলেন ঐ হামলা করার জন্য। তাই বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে এর চরম প্রতিশোধ নিবে। 

🌟 জেল থেকে বাচ্চু সাহেবের জামিনে আসা ✒ 

জেল খেটে জামিনে এসে বাচ্চু সাহেবকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। 

বলতে গেলে জলসিঁড়ি বাস টার্মিনালের আশেপাশের অনেকটা অঞ্চল বাচ্চু সাহেবের নিয়ন্ত্রণে আসে। 

এমনকি সেই সময়ের 6 নং ও 7 নং ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলরও ( নান্দাইল - হোসেনপুর রোড  র পূর্ব পাশে 7 নং ও পশ্চিম পাশে 6 নং ওয়ার্ড ) বাচ্চু সাহেবের কোন ব্যাপারে কথা বলারও সাহস পেতেন না। 

আর বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে তারা চরম প্রতিশোধ নিবেন - তা প্রায় সকলের কাছেই জানাজানি হয়েছিলো। 

🌟 কিন্তু , 2014 ও 2019 সালে আওয়ামী লীগ গভমেন্ট আবার ক্ষমতায় এলে আর তাদের চরম প্রতিশোধ নেয়া হয়নি। 

Comments

Popular posts from this blog

151)POWER OF THE PRIME MINISTER.(প্রধানমন্ত্রীর দাপট।) - Written by Junayed Ashrafur Rahman

707)After the fantasy of ministry.(মন্ত্রিত্বের ফ্যান্টাসির পরে।)– Written by Junayed Ashrafur Rahman